টং দোকানে সফটওয়্যার – টেকনোলোজির ছোঁয়া এখন সর্বত্র

মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ধরুন আপনি একটি অপরিচিত এলাকায় গেলেন এবং আপনার মোবাইলে ব্যালেন্স করার খুব প্রয়োজন হল। অনেক খুজা খুজির পর আপনি একটি সাইন বোর্ড দেখতে পেলেন "এখানে রিচার্জ করা হয়" সেখানে গিয়ে শুধু দেখলেন একটা পিসি নিয়ে বসে আছে একটা ছেলে, তাকে আপনার নাম্বার বলতেই আপনার মোবাইলে মুহুর্তের মধ্যে রিচার্জ হয়ে গেল। তবে কি আপনি অবাক হবেন? আবার ধরুন আপনি দেখতে পেলেন "এখানে রিচার্জ করা হয়" সাইন বোর্ডটি, কাছে গিয়ে (আপনার মোবাইলে) নাম্বারটা লিখার জন্য কলম চাইলেন অথচ আপনাকে একটি কি-বোর্ড এগিয়ে দিয়ে বলল নাম্বারটি টাইপ করুন এবং সাথে সাথে আপনার মোবাইলে কাংক্ষিত ব্যালেন্স পৌঁছে গেল! তাহলে কি অবাক হবেন?
এবার ফিরে আসি মুল কথায় মাত্র দু-চার বছর পুর্বেও মোবাইল রিচার্জ করার জন্য দোকান খুঁজে পেতে কষ্ট হত অথচ আজ ভাবতে অবাক লাগে মোবাইল রিচার্জের এই ক্ষুদ্র দোকানগুলোও সফটওয়ার ব্যবহার করে। দুদিন আগের ঘটনা আমাই একটা কাজে মিরপুর বেরিবাদে (সুইস-গেটে) যাই ঐখানে হঠাৎ-ই মোবাইলে ব্যাল্যান্সের খুব প্রয়োজন হয়। ফুটপাতের পাসে বসে থাকা শুধু একটি কম্পিউটারই তার দোকান! এই একটি মাত্র কম্পিউটার এবং নির্দিস্ট ঐ সফটওয়ারটির মাধ্যমে সে একই সাথে ৫/৬ টি সিমে লোড দিচ্ছে, পাশাপাশি বিকাশ এবং ডিবিবিএল লোড দিচ্ছে এবং গ্রহন করছে। প্রথম দেখাতে আমার কৌতূহলের মাত্রা ছিল ভীষণ! আমি বেশ কিছুক্ষন দারিয়ে সব দেখি এবং এক মুহুর্তের ছেলেটিকে জানতে চাই সফটওয়ারটির ব্যবহার করে তার কি লাভ হচ্ছে। আর না হলেও কমকরে ১০০+ লাভ বল ফেলে এক নিশ্বাসে। আরও অবাক করা ব্যপার হচ্ছে তার কালইনটরা বা কাস্টমাররা তাকে অনলাইনেও রিচার্জ রিকুয়েস্ট পাঠাচ্ছে ঘরে থেকে বসেই!
অনেকেই ভাবছেন ব্যপারটা তেমন আর কি? তাইতো? বুজানোর সার্থে দু-তিনটা লাইন লিখছি বাংলাদেশে শুধু গভমেন্ট সেক্টর নয় অনেক অনেক প্রাইভেট ডেভেলপার ফার্মও আছে যারা তাদের নিজেদেরকে আধুনিকতার শির্শে বলে দাবী করে থাকলেও নিজেদের প্রতিষ্ঠানের একটি ওয়েবসাইটি নেই আর সফটওয়ার তো তারা বুজেনি না এটা কি? ভাবতে হাসি লাগে অনেক সরকারি/বেসরকারি ব্যাংকও আজ তাদের দৈনন্দিন হিসাব করে খাতা-কলমে। তারা আজও টেকনোলোজি গ্রহন করতে পারছে না। অথচ সেই দেশেরই ফুটপাতে যদি এমন সফটওয়ার-এর ব্যবহার দেখি তবে কি অবাক হব না?
আমি ইজিলোডবিডি কিংবা অটোলোড নামক ওয়েব-সাইট গুলো অনেক আগেই দেখেছি যেখান থেকে যে কেঁউ রিচার্জ করতে পারে কিন্তু এই সফটওয়্যার কিংবা সিস্টেমটি যে একটা ফুটপাতের দোকানে ব্যবহার হতে পারে তা ভাবতে পারিনি। তাই আরও কোইতুহল বেরে গেল আসলে এই সফটওয়ারের কি লাভ? বা কত লক্ষ টাকা দিয়েই বা কিনলো এই সফটওয়ার? একটা টং দোকানের জন্য কত টাকাই বা ইনভেস্ট/লঘ্নি করে মানুষ?
যে দেশের ব্যংকের ওয়েবসাইট বানানোর প্রয়োজন হয় না সে দেশের টং দোকানের রয়েছে একটি ওয়েবসাইট তাও আবার অ্যাপ্লক্যশন কিংবা সফটওয়ার বেস একটি ওয়েব-সাইট? এটা কি অবাক হবার নয়?
তারচেয়েও অবাক কর ব্যাপার হচ্ছে মোবাইল রিজার্জ করার ছোট এই দোকানদার তার সফটওয়ারটি ব্যবহার করে মুহুর্তের মধ্যে বলে দিতে পারছে আপনি কত টাকা কখন রিজার্জ করেছেন, এই দোকান থেকে সারা জীবনে কতবার রিজার্জ করেছেন!

যাক কোইতুহল থেকেই খোঁজ করা শুরু করলাম সফটওয়ারটির ব্যবহারের মুল কারনগুলো। এই সফটওয়ারটি ফ্লেক্সি-লোড সফটওয়ার নামেই বেশী পরিচিত। ফ্লেক্সি-লোড সফটওয়ার একটি অনলাইন বেস সফটওয়ার। আরও খোঁজ খবর নিয়ে জানলাম এই সফটওয়ারটির মুল্য মাত্র ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা। পাচটা মোডেম এবং ওয়েব-সাইট (ডিজাইন+হোস্ট+ডোমেইন) সহ ৩৫,০০০-৪৫,০০০ টাকা।

এর মধ্যে ঘটে যায় আরও মজার একটা ব্যাপার আমি আমাদের এলাকার এক বড় ভাই ঊনার মোবাইল রিচার্জের দোকান আছে, উনাকে সম্পুর্ন ঘটনা খুলে বললাম এবং উনি এতটাই পজেটিভ হলেন যে দুদিনের মধ্যে সফটওয়ার কিনে তার দুটি মোবাইলের দোকানই ডিজিটাল করে ফেলল। আপনি চাইলে দেখে আসতে পারেন ভাইয়ার সেই ডিজিটাল দোকান দুটা। গ্যারান্টি দিচ্ছি অবাক হবেন। কল্যাণপুর, বাস স্ট্যান্ড, জননী পয়েন্ট।

মুল কথাঃ হয়ত বা আমাদের দেশে টেকনোলোজির ছুঁয়া এখন সর্বত্র ছড়িয়ে যায়নি, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে টেকনোলোজির ছুঁয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। দু থেকে তিন বছরের মধ্যে নিশ্চিত করে বলা যায় দেশের ৬৫%-৭৫% টেকনোলোজির উপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে। এমন দিন হয়ত আর বেশী দূরে নয় যেদিন আমরা আমরা আমাদের এলাকার মুদীর দোকানগুলার ওয়েব-সাইট থেকে পন্য ক্রয় করব। ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে বাজার করব। আর অনালাইনে মার্কেটিং? তাতো এখনই করছি আমরা। তাই টেকনোলোজির সুবিধা যারা আজও অস্বীকার করে কিংবা টেকনোলোজির বিকল্প খুঁজতে চেস্টা করছেন তাদের জন্য ভয়ংকর একাকিত্তের সময় আসছে?
এই লিখাতে আমি টেকনোলোজির প্রয়জনিয়তা কিংবা ভবিষ্যৎ ফুটিয়ে তুলার চেস্টা করেছি। সকল ভুল ক্ষমার সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল! তবে যুক্তিমূলক সমালোচনা অবশ্যই করবেন। ধন্যবাদ সবাই কে!


আগে এই সফটওয়্যার দেসের বাইরে অনেক সেল হইত তবে ইদানিং দেশে অনেক হচ্ছে । তথ্য প্রজুক্তি কে যারাই লুফে নিয়েছে তারাই সফল হইছে এইটা কারোই অজানা না !! আজকে যারা এইটা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতছেন তারাই আকদিন এই সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন । আমার জানা মতে জেই সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করি ওই ফার্ম অলরেডি ১২০-১৩৫ বার এই সফটওয়্যার সেল করেছে !! থাওলে বুঝুন এর চাহিদা !! মেহেদি মিনাফা ভাইকে ধন্যবাদ সুন্দর একটা ব্যাপার কে সবার সামনে তুলে আনার জন্য :) যাইহক কারো যদি সফটওয়্যার টা দরকার হয় আমাকে ফোন করতে পারেন 01911772398, 01611772398

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 

Blogroll

Most Reading

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Tags